দাঁতের জন্য ক্ষতিকর অভ্যাস

অনেক অভ্যাস আছে, যা অজান্তেই দাঁতের ক্ষতি করে। যে সম্পর্কে আমরা জানি, কিন্তু মানি না। ফিডারে খাওয়ানো ছোট শিশুদের ফিডারে করে দুধ, জুস ইত্যাদি তরল খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস প্রায় সব মা-বাবাই করেন। বিশেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার সময়। এতে যে তার নতুন ওঠা দাঁতগুলো ক্যারিজ আক্রান্তের ঝুঁকিতে পড়ছে, সে বিষয়টি মনেই রাখেন না।

মাউথ গার্ড ছাড়াই খেলাধুলা

খেলতে গিয়ে দাঁতে আঘাত পাওয়ার ঘটনা অনেক, কিন্তু আমরা মাউথ গার্ড ব্যবহার করি না। অনেকেই হয়তো জানিই না, খেলাধুলার সময় মাউথ গার্ড পরে নিতে হয় দাঁত বাঁচানোর জন্য। মাউথ গার্ড বাজারে কিনতে পাওয়া যায়, আবার ডেন্টিস্টের কাছে গেলে তিনিও বানিয়ে দিতে পারেন।

দাঁত কিড়মিড়

অনেকের দাঁত কিড়মিড় করার অভ্যাস আছে। বিশেষ করে রেগে গেলে। ঘুমের মধ্যেও অনেকে দাঁত কিড়মিড় করেন। সাধারণত তীব্র মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে বা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে এমনটি ঘটে। তা যে কারণেই ঘটুক, দাঁত কিড়মিড় করলে এনামেল ক্ষয় হয়ে যায়। এতে দাঁত ও চোয়ালের জয়েন্টের অনেক ক্ষতি হয়। এটা ঠেকাতেও এক ধরনের মাউথ গার্ড ব্যবহার করতে হয়।

চিনিযুক্ত চুইংগাম, কফ লজেন্স

অনেকে গলায় ঘুসঘুসে ভাব দূর করতে মেনথল বা কফ লজেন্স খান। চুইংগাম চিবানোর অভ্যাসও অনেকের আছে। কিন্তু এগুলোতে অতি মাত্রায় চিনি থাকে। তাই সহজেই দাঁতে ক্যারিজও হচ্ছে। একান্তই যদি এ ধরনের কিছু খেতে হয়, তবে খাওয়া শেষে অবশ্যই ব্রাশ করতে হবে।

আইসক্রিম

আইসক্রিমে উচ্চমাত্রায় চিনি থাকে। এ ছাড়া আইসক্রিম খেলে দাঁতের শিরশিরে ভাবও বেড়ে যায়। অনেকের বরফ শীতল পানি পানের অভ্যাস আছে। দাঁতের জন্য এটাও খুব ক্ষতিকর।

কোমল পানীয়

বহু মানুষ জানে কোমল পানীয় স্বাস্থ্যকর নয়, তবু খেতে পছন্দ করে। কোমল পানীয়তেও উচ্চমাত্রার চিনি থাকে। এ ছাড়া থাকে ফসফরিক ও সাইট্রিক এসিড। এসিডগুলো সহজেই দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত করে। এমনকি ডায়েট কোমল পানীয়তেও ক্ষতি হয়। এটাতে চিনি না থাকলেও এসিডগুলো ঠিকই থাকে যে!

দাঁত দিয়ে নখ খোটা

অনেকেরই দাঁত দিয়ে নখ, কলম-পেনসিল ইত্যাদি কামড়ানোর অভ্যাস আছে। আবার যেকোনো কিছু দাঁত ব্যবহার করে খোলার প্রবণতাও আছে। যেমন কৌটার ছিপি ইত্যাদি। এ ধরনের অভ্যাসে দাঁতের ধারালো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অনেক সময় কিছুটা ভেঙেও যায়, যা থেকে পরবর্তী সময়ে ক্যারিজ হতে পারে।

ফলের জুস

ভালো খাবার সন্দেহ নেই, কিন্তু বাজারে পাওয়া যায় এর সবটিতেই থাকে অতিমাত্রায় চিনি। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এই চিনির পরিমাণ কোমল পানীয়ের চেয়ে বেশি। তাই জুস খেতে যারা ভালোবাসে, বাড়িতে বানিয়ে নিন। আর বানানোর সময় যথাসম্ভব চিনি কম ব্যবহার করুন বা চিনির বিকল্প ব্যবহার করুন।

পটেটো চিপস

বাচ্চাদের খুব প্রিয়, বড়দেরও কম না। এটি আবার দাঁতে থাকা ব্যাকটেরিয়াদেরও পছন্দের খাবার। চিপস খাওয়ার পর তা দাঁতে লেগে থাকে দীর্ঘ সময়। অথচ মাত্র ২০ মিনিট দাঁতে লেগে থাকলেই মুখে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো এসিড তৈরি করে ফেলে। এই এসিডের কারণে ক্যারিজপ্রবণতাও বাড়ে। তাই চিপস খাওয়ার পর ব্রাশ ও ফ্লাস করতে হবে।

চা-কফি

চা-কফির অনেক উপকার আছে। কিন্তু এগুলো দাঁতে সহজেই হলদেটে দাগ ফেলে দেয়। অনেকের চা-কফিতে বেশি চিনি খাওয়ার প্রবণতা আছে, এতে ক্যারিজ হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে। চা-কফি পানের পর ভালো করে কুলকুচি করে নেওয়া জরুরি।

ধূমপান

শুধু সিগারেট নয়, তামাক ও তামাকজাত সব পণ্যই দাঁত ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। জানা কথা। তবু আরেকবার মনে করিয়ে দিচ্ছি। মুখ ও মুখ-গহ্বরে ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় কারণ তামাক ও তামাকজাত পণ্য।

Leave a Reply